জেনে নিন আমাদের জাতীয় জীবনে খেলা-ধুলার প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব
প্রিয় পাঠক আজকে আমরা আমাদের জাতীয় জীবনে খেলা-ধুলার প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করব। আপনার যদি জাতীয় জীবনে খেলা-ধুলার প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব সম্পর্কে জানার প্রয়োজন থাকে তাহলে আজকে এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনি আমাদের জাতীয় জীবনে খেলা-ধুলার প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
মন ও দেহের সাথে খেলাধুলার গভীর সম্পর্ক । সুস্থ ও সবল শরীর লাভের একমাত্র উপায় হল খেলাধুলা । সুস্থ-সবল মানুষেরাই ভালো সুন্দর সমাজ গড়ে তুলতে পারে । মানব সভ্যতার অগ্রগতির সাথে বেড়েই চলেছে ব্যস্ততা । অধিক সাফল্যের পেছনে সব সময় ছুটে চলেছে। বিরতি এনে দেয় খেলাধুলা কর্মময় জীবনে।
ভূমিকা
নিছক আনন্দের বিষয় নয় খেলাধুলা এর সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে দৈহিক সুস্থতা ও মানসিক পরিতৃপ্তি। সুস্থ ও সুন্দর জীবনের জন্য আমাদের জাতীয় জীবনে খেলা-ধুলার প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব অপরিসীম। জ্ঞানার্জনের জন্য যেমন জ্ঞানচর্চা আবশ্যক তেমনই সুস্থ দেহ মনের জন্য খেলাধুলা প্রয়োজন। তাই আমাদের জাতীয় জীবনে খেলা-ধুলা প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব অপরিসীম।
সুস্বাস্থ্যের জন্য খেলাধুলা
সুস্থ-সবল দেহ গঠনের জন্য এবং স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য সুস্বাস্থ্যের জন্য খেলাধুলার বিকল্প নেই। শরীরকে সবল ও কর্ম ক্ষম রাখতে নিয়মিত খেলাধুলা করা চাই। দেহের কোষ গুলোর পুষ্টি সাধনের জন্য ও খেলাধুলা করা আবশ্যক এতে শরীর চর্চার কাজটি সহজেই হয়ে যায়। রোগব্যাধি দূরীকরণের সহায়ক শরীরের খেলাধুলা।
হৃদপিন্ডের ও ফুসফুসের বিভিন্ন অসুখ প্রতিরোধের জন্য খেলাধুলার প্রয়োজন রয়েছে। ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করা যায় সাঁতারের মাধ্যমে। অতিরিক্ত মেদ ও চর্বি দূর করে খেলাধুলা মানব দেহের। খেলাধুলার কার্যকর প্রভাব রয়েছে সুন্দর ও সুঠাম শরীর গঠনে।
মানসিক বিকাশে খেলাধুলা
মানসিক বিকাশে খেলাধুলা অত্যন্ত নিবিড় সম্পর্ক মানুষের দেহ ও মনের। দেহ সুস্থ সবল থাকলে মানসিক প্রসন্নতা বিরাজ করে। খেলাধুলার যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে মনের সতেজতা ও প্রাণময়তা রক্ষায়। মানুষের বুদ্ধিমত্তার বিকাশ ঘটে কোন কোন খেলাধুলায়। মানসিক শক্তি অর্জন ধৈর্য ও সহনশীলতা বৃদ্ধি আত্মবিশ্বাসী হওয়া।
দুশ্চিন্তাদ দূরীকরণ প্রভৃতি ক্ষেত্রে খেলাধুলা সহায়ক হিসেবে কাজ করে। মানসিক প্রসন্নতা অর্জন করা যায় সুস্থ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে। মানসিক শক্তি অর্জনের খেলাধুলার অসামান্য ভূমিকা রয়েছে। ৪০০০ বছর আগে খেলার সূচনা হয়। সে খেলার নাম কুস্তি।
কুষ্টিযুদ্ধ ও দৌড় খেলা গুলো জন্ম হয়। বিভিন্ন ধরনের খেলা প্রচলিত আছে সারা বিশ্বে। ছাতা টেবিল টেনিস টেনিস ক্রিকেট ব্যাডমিন্টন ফুটবল বাস্কেটবল হকি হ্যান্ডবল সহ নানা দেশে জন্ম নিয়েছে বিভিন্ন খেলা।
শিক্ষা জীবনে খেলাধুলা
শিক্ষা জীবনের খেলাধুলা আনন্দের সম্পর্ক রয়েছে শিক্ষার সঙ্গে। শিশুর মানসিক বিকাশ বিঘ্নিত করে একঘেয়ে নিরানন্দ শিক্ষায়। তাই আজকাল শিশু শিক্ষার প্রাথমিক পর্যায়ে আনন্দ উপাদানের আশ্রয় নেওয়া হয়। খেলাধুলাকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে উন্নত বিশ্বে শিক্ষাকে আনন্দদায়ক ও আকর্ষণীয় করার জন্য।
শিক্ষার্থীদের শিক্ষার সাথে খেলাধুলাতে যুক্ত রাখার অভিপ্রায় থেকেই অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে খেলার মাঠ গড়ে উঠেছে। আমাদের দেশের গ্রামেগঞ্জে গড়ে ওঠা প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো অধিকাংশই ছোট বড় খেলার মাঠ আছে।
মূলত শিক্ষাকে আনন্দপূর্ন ও আকর্ষণীয় করার জন্যই এর ব্যবস্থা আজকাল অনেক স্কুল কলেজে ক্লাসের ফাঁকে ফাঁকে ছাত্রছাত্রীদের দাবা টেবিল টেনিস ক্যারাম ইত্যাদি খেলার সুযোগ দেওয়া হয় প্রতিবছর ক্রিয়া ও সংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয় শিক্ষাকে একঘেয়েমি মুক্ত রাখতে।
চরিত্র গঠনে খেলাধুলা
চরিত্র গঠনে খেলাধুলা সহায়ক মানুষের । এর মাধ্যমে নিয়ম শৃঙ্খলা মেনে চলার অভ্যাস গড়ে ওঠে। খেলতে গিয়ে খেলোয়াড়রা পরস্পরের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করার শিক্ষা অর্জন করে দলপতির অধীনে দলবদ্ধ হয়ে। দলীয় খেলায় খেলোয়াড়দের মধ্যে ঐক্য চেতনা জাগ্রত হয়। মান্যতাবোধ জন্মে কোচ অ্যাম্পিয়ার ও রেফারীকে মান্য করতে গিয়ে।
দলকে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে নেতৃত্ব গুণ সৃষ্টি ও বিকশিত হয়। খেলার মাধ্যমে ধৈর্য সংযম ও নিয়মানুবর্তিতা শেখা যায়। মানুষের চরিত্রে দৃঢ়তা সে খেলাধুলার মাধ্যমে। সহজভাবে মেনে নেওয়া মানসিকতা তৈরি হয় মানুষের ব্যক্তিগত জীবনেও যেকোনো বিষয়ে জয় পরাজয়।
সৌভ্রাতৃত্ব ও মৈত্রী গঠনে খেলাধুলা
খেলাধুলার মধ্য দিয়ে মানুষের মানুষের দেশে-বিদেশে প্রীতির সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মানব মৈত্রী ও সৌভ্রত্ব সৃষ্টিতে খেলাধুলা রয়েছে ইতিবাচক ভূমিকা। জাতি ধর্ম বর্ণের পার্থক্য ঘুচিয়ে খেলাধুলা মানবজাতিকে মহামিলনের জয়গান শোনায়।
বিশ্বব্যাপী অনুভব করেছে দেশ ভেদ জাতিভেদ সত্বেও মানুষ ২০০০ সালে সিডনি অলিম্পিকের অনুপম উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। অলিম্পিক ক্রিকেট ও ফুটবল বিশ্বকাপ ইউরোপিয়ান গেমস এশিয়ান গেমস ইত্যাদি আন্তর্জাতিক খেলাধুলার আয়োজন মানুষের সাম্য মৈত্রী জাগিয়ে তুলে।
খেলাধুলা শিশুদের জন্য কতটা গুরুত্ব
শিশু মনে পরিপূর্ণ বিকাশে সহায় ক খেলাধুলা। প্রয়োজন নেই খেলাধুলার জন্য বড় মাঠ। খোলা জায়গা বাসার আশেপাশে সামান্য খোলা জায়গা হল খেলাধুলা করা যায়। দড়ি লাফ দৌড়াদৌড়ি হাটাহাটি করা যায়। এসব খেলায় শরীরের ক্লান্তি দূর হয়। ব্যক্তিত্বের বিকাশ হয়। উপস্থিত বুদ্ধি বৃদ্ধি হয় খেলাধুলায়।
শিশুদের একঘেয়েমিতা দূর করতে খেলাধুলা বিকল্প নেই। যেসব খেলায় শিশুদের ছোটাছুটি করার সুযোগ রয়েছে যেমন ক্রিকেট ফুটবল দৌড়াদৌড়ি গোল্লাচর ইত্যাদি। এসব খেলার মাধ্যমে শারীরিক কাঠামো মজবুত হবে শিশুদের। নৈপূণ্যতা দক্ষতা নানান ধরনের কাজে আয়ত্ত আসবে।
খেলাধুলার মাধ্যমে শিশুদের আচার-আচরণ বুদ্ধিমত্তা পড়াশোনা ইত্যাদিতে এগিয়ে থাকতে সাহায্য করে। মিলেমিশে খেললে সকলের সাথে সামাজিক আচরণ সম্পর্ক ভালো হয়। কল্পনা শক্তি চিন্তা শক্তি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়তে অনেক ভূমিকা রাখে খেলাধুলা।
শেষ কথা
শরীর গঠন ও মনের আনন্দ বিধানের জন্য খেলাধুলা আবশ্যক। ব্যক্তিত্বের বিকাশ সম্প্রীতি বোধ অর্জন ও জাতি ধর্ম বর্ণের বিভেদ দূরীকরণে আমাদের জাতীয় জীবনে খেলা-ধুলার প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব রয়েছে। খেলাধুলার মাধ্যমে মানুষ দ্বায়িত্বশীল হয়ে ওঠে। ঐক্য চেতনা জাগরণেও খেলাধুলার কার্যকর ভূমিকা রয়েছে। তাই আমাদের জাতীয় জীবনে খেলা-ধুলার প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব অনস্বীকার্য।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url