মেথির উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন

প্রিয় পাঠক আজকে আমরা মেথির উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে  আলোচনা করব। আপনি  যদি মেথি বিষয়ে কোনো কিছু জানতে চান তাহলে আজকে এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনি মেথি বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
মেথির উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
মেথি একটি মৌসুমী গাছ। গ্রাম বাংলার মানুষ এটি শাক হিসেবে খেয়ে থাকে। আমাদের দেশে কবিরাজি চিকিৎসায় মেসি ব্যবহৃত হয়। মসলা হিসেবে ম্যাচি ব্যবহৃত হয় । পাঁচফোড়ন হিসাবে মেথি ব্যবহৃত হয়। মেথি বিষয়ে আরো কিছু নিচে বিষাদ ভাবে আলোচনা করা হবে।

ভূমিকা

বর্ষজীবী গাছ মেথি। মেথির ফুল ও ফল হয়। একটি ডালে তিনটি করে পাতা থাকে মেথির। ফুলে অভালে তিনটি করে পাপড়ি থাকে। মেথির ফুল সাধারণত সাদা ও হলুদ হয়। বাদামি ও হলুদ বর্ণের হয়ে থাকে। মেথির ব্রিজ দেখতে সাধারণত চার কোন আকৃতির হয়। মেথি খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা নিম্নে আলোচনা করব।

মেথির উপকারিতা

মেথি যেহেতু ভেষজ একটি উপাদান এটির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই বললেই চলে। এটি অত্যন্ত উপদেয় আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য। এটি শুধু রান্নাঘরে সীমাবদ্ধ নয় আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরিতেও মেথি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। উজ্জ্বল করতে মেত্তি ব্যবহার করা হয় । ত্বকের বলি রেখা দূর করে মেখে। চোখের নিচে কালো দাগ দূর করে মেথি। 


এন্টি ব্যাকটেরিয়াল পদার্থ থাকে মেথিতে ত্বকের গভীরে যেয়ে পরিষ্কার রাখে। ব্রণের হাত থেকেও রক্ষা করে মেথি। অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে খালি পেটে মেথি খাওয়া। মেথি একটি পুষ্টি দেউ খাবার। সকল বয়সের মানুষ এটি খেতে পারে। মানবদেহের ফাইবারের পরিমাণ বজায় রাখে মেথি। আমাদের খিদে লাগতে দেয় না ফাইবার। 

স্বাভাবিকভাবে খাবার পরিমান কমে যায় ফলে ওজন কমে যায়। কোলেস্টেরিল কমায় মেথি। মেথিতে স্টেরিওডাল সেপনিনস  নামক উপাদান কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে হাট স্ট্রোক বেড়ে যায়। মেথিতে গ্লেক টু মানান নামে একটি উপাদান পাওয়া যায়। যা হার্টের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।বাতের ব্যথা কমায় মেথি। 

বয়স্ক লোকদের বেশিরভাগই বাতের ব্যথা রয়েছে। মেথি ব্যথা বেদনা কমাতে সাহায্য করে। বুকের দুধ বৃদ্ধি করে মেথি। ডায়োস জেনিন নামক পদার্থ রয়েছে মেথিতে যা মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। ভিটামিন মিনারেল থাকায় মাতৃদুগ্ধে পুষ্টিগুণ ও বৃদ্ধি করে দেয়।বুকের দুধ খাওয়ানোমায়েদের ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়ানো উচিত। 

কিডনি র কার্যক্ষমতা ও বৃদ্ধি করে মেথি। ক্যালসিয়াম অক্সালেট রয়েছে মেথিতে যা কিডনির পাথর দূর করতে সাহায্য করে। মেথি খেলে কিডনির মধ্যে কম কাল্সিফিকেশন তৈরি হয়। শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখতে মেসির কোন জুড়ি নেই ।

মেথির অপকারিতা

মেথির স্বাদে অনেক তিতা। জারা তিতা খেয়ে অভ্যস্ত নেই তাদের জন্য মেথি খাওয়া অনেক দুষ্কর ব্যাপার। যার ফলে মেথি খেলে বমি ভাব হয় মাথা ঘোরায়। ডায়াবেটিস রোগীদের শরীরে চিনির পরিমাণ কমিয়ে দেয়। ফলে তাদের জন্য বিপদজন ক হয় মেথি। তাছাড়া শরীরের রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না মেথি। যাদের শরীরের রক্ত পাতলা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করা উচিত। গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়ায় মেথি। গর্ভবতী মায়েদের বেশিদিন মেথি খাওয়া উচিত নয়।

মেথি খাওয়ার নিয়ম

আমরা অনেকে জানিনা কিভাবে মেথিখেলে উপকার পাওয়া যায়। প্রতিদিন রাতে যদি এক গ্লাস পানিতে এক চামচ মেথি ভিজিয়ে রাখে পরের দিন সকালে সেই পানি পান করলে উপকার পাওয়া যায়। মেথি মেশানো পানিতে লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে পান করা যায়। এছাড়া মেথি দিয়ে রুটি পরোটা ঝোল তরকারি সালাদ ডাল মাছে ব্যবহার করা যায়। এছাড়াও নিয়ম জেনে মেথি খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। 


যারা কৃমির সমস্যায় ভুগে থাকেন তাদের জন্য ম্যাচে অনেক উপকার। নিয়মিত মেথি খেলে কৃমির দূর হয়। মেথির দানা কাপড়ের বেঁধে মাংসপেশিতে ব্যবহার করলে ফোলা ভাব ও ব্যথা কমায়। শুকনো কড়াইয়ে এক চামচ মেথি দানা ভেজে নিন। তা গুঁড়ো করে নিন। পাউডার তৈরি করুন। পানিতে পাউডার মিশিয়ে সকালে পান করুন।

গ্যাস্ট্রিকের জন্য মেথি

বর্তমান সময়ে গ্যাস্ট্রিক কমন একটি সমস্যা। ছোট বড় সবারই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয়ে থাকে। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার জন্য আমরা অনেক টাকা ব্যয় করে থাকি। পরীক্ষা থেকে শুরু করে এন্টিবায়োটি ক ঔষধ খেতে হয় আমাদের । দীর্ঘদিন ওষুধ খেলে আমাদের গ্যাস্ট্রিক থেকে অনেক ধরনের অসু খ তৈরি হয়। 

টেলিফোন ইউআপনি জানেন কি আমাদের হাতের কাছে রয়েছে গ্যাস হতে মুক্তির উপায়। গ্যাস থেকে চিরতরে মুক্তি করে দেবে মেথি। মেথি গ্যাস ও বদ হজম এর মহা ঔষধ হিসেবে পরিচিত।

ডায়াবেটিসে মেথি

ডায়াবেটিক্স রোগীদের জন্য মেথি খাওয়া উপকারিতা অনেক। চার থেকে ছয় মাস দৈনিক দশগ্রাম মেথি খেলে ডায়াবেটিস কমে আসে। রক্তের শর্করা মাত্রা কমে আসা শুরু করে। মেথি প্রিড ডায়াবেটিস হওয়া থেকে দূরে রাখতে পারে। পৃথিবীর উচ্চ দ্রবনী ওয়াজ যা হজম ও কার্বোহাইড্রেট শোষণ করে রক্তের শর্করা কমাতে সাহায্য করে। বিভিন্ন খাবারে যোগ করে রক্তের গ্লুকোজ মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। সময় কিছুটা বেশি লাগতে পারে।

চুলের যত্নে মেথি

চুলের যত্নে মেথির ভূমিকা অপরিসীম। মেথি চুল পড়া সমস্যা দূর করে। চুলের অকালপক্কতা দূর করে। খুশকি দূর করে চুল পড়া বন্ধ করে। নতুন চুল গজাতে সহায়তা করে। চুল পড়ে না এমন লোক খুঁজে পাওয়াই মুশকিল। বহুৎ কারণে পড়তে পারে চুল। চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায় চুল বেশি পড়ে গেলে। চুলের যত্নে তাই মেথির গুরুত্ব অনেক। 

মেথিতে প্রোটিন ও নিকোটিনেট এসিড রয়েছে যা চুলকে পুষ্টি যোগায় এবং স্বাস্থ্য উজ্জ্বল করে তোলে। নিয়মিত মেথি ভিজানো পানি পান করলে চুল ওঠা বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া মেথি ভিজে ওই পানি চুলে দশ মিনিট মেসেজ করুন এবং কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন। তারপর ধুয়ে ফেলুন এতে চুল গোড়া মজবুত হবে। তিন থেকে চার চামচ মেথি পানিতে ভিজিয়ে রাখুন সারারাত। 

মেথিসহ পানি ব্লেন্ড করে নিন এতে তিন চার চামচ টক দই যোগ করুন। যে পেস্ট তৈরি হবে তা মাথায় লাগিয়ে নিন। ৩০ থেকে ৪০ মিনিট অপেক্ষা করুন শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। মাথার খুশকি দূর হয়ে যাবে।

লেখকের  মন্তব্য

আমরা জানতে পারলাম মেথির উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। এছাড়াও মেথির ব্যবহার সম্পর্কে অনেক কিছুই জেনেছি। দৈনন্দিন জীবনে মেথির ক্ষতির চেয়ে উপকারী বেশি। আজ এখানেই শেষ করলাম।




এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url