ঘুমানোর আগে তিন কুল পড়া সুন্নত জেনে নিন
প্রিয় পাঠক আপনারা আনন্দিত হবেন যে আজকে আপনাদের সাথে এমন একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি ইসলামীক দৃষ্টিকোণ থেকে।যা আজকে আর্টিকেলে আলোচনা করব ঘুমানোর আগে তিন কুল পড়া সুন্নাত সম্পর্কে ।
আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত নবী রাসূল (সাঃ) প্রতি রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক, ও সূরা নাস পাঠ করে দুই হাত একত্রে করে ফুঁক দিতেন এবং যতদূর পারতেন সমস্ত শরীর হাত বোলাতেন। মাথা এবং মুখ থেকে শুরু করে তার দেহের সামনের দিকে উপরের দিকে হাত বুলাতেন। এভাবে তিনি তিনবার করতেন।
ভূমিকা
ইসলামে সূরা পড়া একটি প্রধান আমল। ঘুমানোর আগে তিন কুল সূরা পড়া সুন্নতের অন্তর্ভুক্ত । এবং এই সুন্নাহটি সারা মুসলিম জাহানের বেশিরভাগ মুসলমান এই সুন্নত অনুসরণ করেন। এই সূরাগুলি হলোঃ সূরা আল ইখলাস, সূরা আল ফালাক এবং সূরা আন- নাস।
এই সূরাগুলি পড়ে সতর্কতা চাওয়া হয় এবং মৃত্যু থেকে রক্ষার জন্য, অপরাধ থেকে রক্ষার জন্য, শত্রুর হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য, এবং অসুখের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এই সূরা পড়া হয়। প্রিয় পাঠক এ আর্টিকেলটি ভালোভাবে পড়ার মাধ্যমে ঘুমানোর আগে তিন কল পড়া সুন্নত জেনে নিন।
তিন কুল পড়ার নিয়ম
তিন কুল সূরা পড়ার নিয়ম মুসলিম ধর্মীয় অভ্যাসের একটি। তিন কুল সূরা হলো সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক, এবং সূরা নাস। এই সূরাগুলি পড়ে অনেক মুসলমান বিশ্বাস করে তাদের জন্য রাত্রিতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এই সূরা পড়লে আল্লাহতালা বিভিন্ন বিপদের হাত থেকে রক্ষা করেন ।এটা একদিকে মুসলিম ধর্মীয় একটি অভ্যাস হিসেবে ধরা হয়।
এই সূরা গুলি পাটের মাধ্যমে মুসলিম বিশ্বাসীরা তাদের মনোবল উন্নত করে এবং অনুরোধ করেন আল্লাহর অতীতে বর্তমানে এবং ভবিষ্যতের সাহায্য এবং রক্ষা প্রদান করার জন্য। এই তিনটি সূরা সাধারণত ফজর ও মাগরিবের পর তিনবার করে। জহুর আসর ও এশার পর একবার করে । রাতে শোয়ার আগে বিছানায় তিন কুল তিনবার পাঠ করবে।
পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের পর সুন্নত আমল গুলোর মধ্যে হল জহুর, আসর, ও এশার সালাতের পর সূরা ইখলাস সূরা ফালাক সূরা নাস একবার করে পাঠ করা। আয়েশা (রাঃ) আনহু থেকে বর্ণিত রাসূল (সাঃ) যখন বিছানায় আসতেন তখন এই তিনটি সূরা পড়তেন এবং দুই হাত উপরে তুলে ফুঁক দিতেন এবং দুই হাত শরীরের যতদূর পর্যন্ত পৌঁছায় ততদূর পর্যন্ত মাসহা করতেন।(সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫৭৪৮)
তিন কুল বাংলা উচ্চারণ
তিন কুল সুরার বাংলা উচ্চারণঃ
- সূরা ইখলাসঃ “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। কুলহু আল্লাহু আহাদ। আল্লাহু সামাদ। লাম ইয়ালিদ। ওয়ালাম ইয়ুলাদ। ওয়ালাম ইয়া কুল লাহু কুফুয়ান আহাদ।”
- সূরা ফালাকঃ “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। কুল আউযুবিল ফালাক। মিন শারি মা খালাক। ওয়া মিন শারি গাসিকিন ইযাওয়াকাব। ওয়ামিন শারিন নাফাছাতি ফিল উকাদ। ওয়া মিন শারি হাসিদিন এজা হাসাদ।”
- সূরা নাসঃ “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। কুল আউযুবি রাব্বিন নাস। মালিকিন নাস।এলাহিন নাস। মিন শারি ওয়াসওসিল খন্নাস। আল্লাযী ইউ ওয়াস বিছু ফিছু দূরেন নাচ। মিনাল জিন্নাতে ওয়ান নাস।
তিন কুল পড়ার ফজিলত
ইসলামে সূরা পড়ার ফজিলত অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তিন কুল সূরা হলো সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক, এবং সূরা নাস। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন যে, ব্যক্তি প্রতিদিন তিন কুল সূরা পড়বে তার জন্য মুকাফাত(পরামর্শ) হবে, এবং তার মনুষত্ব পরিষ্কার হবে।
তারাবির সময়ে সূরা ইখলাস এর ১১ বার পড়া সুন্নত এবং সূরা ফালাক এবং সূরা নাস পড়া অত্যন্ত মুস্তাহাব(প্রশংসনীয়)। এছাড়াও এই সূরাগুলি যারা রোজা রেখে পড়েন তারা নিশ্চিত করে রাখেন যে সমস্ত কষ্ট, বিপদ ও মুসিবত থেকে আল্লাহ পালন কর্তার কাছ থেকে প্রেরণা পাবেন।
লেখকের মন্তব্য
কুল সূরা কোরআনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি সূরা। এটি প্রধানত ইহলাস বা পুরো শুদ্ধতা এবং তাওহীদ বা আল্লাহর একত্ব নিয়ে আলোচনা করে। এই সূরা মুসলিমদের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ স্থান রাখে। এবং তারা প্রতিদিন এটি পড়ে থাকেন। এটির মন্তব্য প্রত্যেকটি মুসলিমের মনে উৎসাহ এবং বিশ্বাস বৃদ্ধি করে। এটি সূরা ফাতিহার পরের সবচেয়ে বেশি পড়া ও মন্ত্রিত্ব ছাড়া হিসেবে পরিচিত।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url