কাবাডি খেলার নিয়ম কানুন জানুন
প্রিয় পাঠক বন্ধুরা আপনারা কেমন আছেন। আপনারা জেনে আনন্দিত হবেন যে আজকের এই
পোস্টটি আমি আপনাদের সাথে কাবাডি খেলার নিয়ম কানুন নিয়ে কিছু কথা বলবো। আমাদের
দেশে কাবাডি একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় খেলা। এই খেলা বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে বেশি
জনপ্রিয় হওয়ায় একে গ্রাম বাংলার খেলা বলা হয়ে থাকে।
কোনু কোনু জায়গায় এই খেলা কাবাডি এবং হা-ডু-ডু খেলা নামে পরিচিত। এই খেলা
অত্যন্ত জনপ্রিয় হওয়ায় হা-ডু-ডু বা কাবাডি খেলার নিয়ম কানুন সঠিক না থাকায়
বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন নিয়মে এই খেলা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
ভূমিকাঃ কাবাডি খেলার নিয়ম কানুন জানুন
প্রতিটি দেশে একটি জাতীয় খেলা আছে। যেমন ক্রিকেট ইংরেজদের জাতীয় খেলা, বেস বল
আমেরিকানদের জাতীয় খেলা। বাংলাদেশের বলতে আমাদের জাতীয় খেলা হাডুডু বা কাবাডি।
কিন্তু কালের বিবর্তনে এই খেলার কদর দিন দিন হারিয়ে যেতে বসেছে। ১০ বছর আগের কথা
বলছি তখন স্কুল ভিত্তিক আন্তঃস্কুল বা থানা কাবাডি প্রতিযোগিতার আয়োজন চোখে
পড়তো ।
আরও পড়ুনঃ মাথাব্যাথা দূর করার ঘরোয়া উপায় জেনে নিন
বর্তমানে সেটাও আর চোখে পড়ে না। আবার অনেকে হা-ডুডু খেলার নিয়ম পর্যন্ত জানেনা।
তাই এই আর্টিকেলে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী হাডুডু বা কাবাডি খেলার নিয়ম কানুন
সম্পর্কে আলোচনা করব।
কাবাডি খেলার নিয়ম
পাক ভারত উপমহাদেশের কাবাডি হলো একটি জনপ্রিয় প্রাচীন খেলা। তবে উপমহাদেশের
অঞ্চল ভিত্তিক বিভিন্ন নামে এই খেলা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। যেহেতু এই খেলাটি
আঞ্চলিক খেলা তাই বিধিবদ্ধ নিয়ম কানুন কিছুই ছিল না। একসময় গ্রামাঞ্চলে
বিনোদনের একমাত্র উৎসই ছিল এই হাডুডু বা কাবাডি খেলা। হাডুডু বাংলাদেশের
ঐতিহ্যবাহী খেলা হওয়ায় এই খেলার পোশাকি নাম কাবাডি । এই কাবাডি খেলার নিয়ম কানুন
সম্পর্কে জানবো।
খেলার নিয়মাবলী-কাবাডি খেলার কিছু নিয়মাবলী আছে তা নিচে আলোচনা করা হলো।
- মাঠ-কাবাডি খেলার জন্য মাঠ লেগে থাকে ১২.৫০ মিটার চওড়ায় ১০ মিটার হয়।
- সদস্য-প্রতিটি দলে ১২ জন করে খেলোয়াড় অংশগ্রহণ করতে পারে।
- সময়-খেলা চলাকালীন সময় পাঁচ মিনিট বিরোধী সহ ২ অর্ধে পুরুষদের ২৫ মিনিট করে এবং মেয়েদের ২০ মিনিট করে খেলা অনুষ্ঠিত হয়।
- পয়েন্ট-খেলা চলাকালীন সময় যদি কোন খেলোয়াড় মাঠের বাইরে চলে যায় তাহলে সে আউট বলে গণ্য হবে।
কাবাডি খেলার ইতিহাস
বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী হাডুডু খেলার পোশাকি নাম কাবাডি। কিছুদিন আগ
পর্যন্ত হাডুডু বা কাবাডি খেলাছিল বিনোদনের একমাত্র অন্যতম উৎস। প্রাগৈতিহাসিক
যুগ থেকে ধারণা করা যায় যে প্রাচীন যুগে মানুষ যখন খাদ্য সংগ্রহের পাশাপাশি
নিজের অস্তিত্ব রক্ষা করার জন্য মানুষ দলীয়ভাবে বা এককভাবে স্বীকার করতে এবং
বন্যপ্রাণীর আক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য যে কলা কৌশল শিখেছিল, ঠিক তখন
থেকেই কাবাডি খেলার সূচনা।
তবে কাবাডি খেলা উৎপত্তি সম্পর্কে প্রচলিত আরেকটি ধারণা পাওয়া যায় যে এটি আরম্ভ
হয় তামিলনাড় -তে। সাধারণত দুইটি বাচ্চা ছেলের ছোঁয়াছুঁয়ি খেলা থেকে এই খেলা
ধারণা পাওয়া যায়, এই খেলার মধ্যে যদিও দম ধরে রাখার বিষয়টি পরে যুক্ত হয়।
তামিল এলাকায় এই খেলাটি কাবাডি, গুড্ডু গুড্ডু, সাডুগুডি, পালিঞ্জাডুগুডু, ও
সাডুগুডাত্থি নামে পরিচিত। খুব সম্ভবত কাবাডি শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে তামিল কাই
(হাত) ও পিডি (ধরা) শব্দ থেকে।
আরও পড়ুনঃ গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা জেনে নিন
এই কাবাডি খেলা বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন নামে পরিচিত। এই খেলা সাধারণত বাংলাদেশে
হাডুডু, নেপালে ডুডু, শ্রীলঙ্কায় গুড্ডু গুড্ডু, ভারত ও পাকিস্তানের কাবাডি,
থাইল্যান্ডে থিকাব, মালয়েশিয়া ছি গুড্ডু গুড্ডু নামে প্রচলিত ছিল। দলগত এবং
ব্যক্তিগত শত্রুপক্ষের আক্রমণ প্রতিহতকরণ এবং তড়িৎ পাল্টা আক্রমণের কলাকৌশল
চর্চা করতে গিয়েই এই খেলার উদ্ভব হয়েছে।
কাবাডি খেলার উপকারিতা
এই খেলায় সফলতার পূর্ব শর্ত হচ্ছে শারীরিক ও মানসিক ক্ষীপ্রতা, পেশীর ক্ষিপ্রতা,
ফুসফুসের শক্তি ও সহনশীলতা, দ্রুত চিন্তা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা, ক্ষমতা
প্রয়োগের সামর্থ্য, এবং সর্বোপরি প্রতিপক্ষের কৌশল ও মনোভাব অনুধাবনের যোগ্যতা।
কাবাডি একটি অনাড়স্বর খেলা ।
কাবাডি খেলার খেলোয়াড় সংখ্যা কতজন
বাংলাদেশের গ্রাম গঞ্জের ঐতিহ্যবাহী খেলা হচ্ছে কাবাডি । একসময় গ্রাম অঞ্চলে
আনন্দের একমাত্র উৎস ছিল এই কাবাডি খেলা। এই খেলার কোন নিয়ম কানুন না থাকায়,
খেলাটি সাধারণত বিভিন্ন নিয়মে পরিচালিত হয়। এই খেলা খেলার জন্য প্রতি দলে ১২ জন
খেলোয়াড় অংশ নেয়। কিন্তু খেলার জন্য মাঠে প্রতি দলের সাতজন করে খেলোয়াড়
নামে। বাকি ৫ জন অতিরিক্ত খেলোয়াড় হিসেবে মাঠের বাইরে অবস্থান করে।
বাংলাদেশের জাতীয় খেলা কাবাডি
১৯৭২ সালে অফিসিয়াল স্ট্যাটাস দেওয়া হয়,বাংলাদেশের জাতীয় খেলা হলো কাবাডি।
বাংলাদেশের অপেশাদার কাবাডি ফেডারেশন গঠিত হয়েছিল ১৯৭৩ সালে। ইরানে কাবাডির
সম্প্রদায় গঠিত হয়েছিল ১৯৯৬ সালে, এশিয়ান কাবাডি ফেডারেশনের যোগদান করেছিল
তারা সবাই একই বছর এবং তারা আন্তর্জাতিক কাবাডি ফেডারেশনের যোগদান করেছিল ২০০১
সালে।
লেখকের মন্তব্য
পোস্টটি লেখা শেষে আমরা বলতে পারি, কাবাডি খেলা গ্রাম গঞ্জের একটি ঐতিহ্যবাহী
খেলা। এক সময় গ্রাম গঞ্জের আনন্দের উৎস হিসেবে কাবাডি খেলা ছিল অন্যতম। যদিও
কাবাডি খেলার সঠিক কোন নিয়ম-কানুন নেই, তারপরেও এই পোষ্টের মাধ্যমে কাবাডি খেলার
নিয়ম কানুন সম্পর্কে আপনাদেরকে জানানোর চেষ্টা করেছি। এই পোস্টটি যদি আপনাদেরকে
ভালো লেগে থাকে বা আপনাদের যদি কোন পরামর্শ থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে
আমাকে জানাবেন এবং অন্যদের মাঝে শেয়ার করবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url