জেনে নিন গরমে শিশুর ডায়রিয়া হলে কী খাবার খাওয়াবেন
এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করব গরমে শিশুর ডায়রিয়া হলে কি খাবার খাওয়াবেন বা
খাওয়ানো যাবে সে সম্পর্কে । ডায়রিয়ার কারণে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে পানি
বেরিয়ে যায়, পানি বেরিয়ে যাওয়ার জন্য শরীরে পানির ঘাটতি হয়ে থাকে। শরীরের
ঘাটতি পূরণের জন্য প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হয়। যেমন-ডাবের পানি, জুস,
ওরস্যালাইন ইত্যাদি সহ প্রচুর পরিমাণে তরল খাবার খেতে হয়।
এইগুলো তরল খাবার খেয়ে অনেকের শক্তি নাও হতে পারে। এজন্য তাদের তরল খাবারের
পাশাপাশি শক্ত বা আধা তরল খাবার খেতে হবে। ডাবের পানি, লাচ্ছি, কম লিকারের চা
ইত্যাদি। গরমে শিশুর ডায়রিয়া হলে কি খাবার খাওয়াবেন তাহলো ডাইরিয়া আক্রান্ত
শিশু সঠিক খাদ্য গ্রহণ চালিয়ে যাওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাকে সহজপাচ্য, নরম
খাবার দিতে হবে যেমন খিচুড়ি।
পোস্ট সূচিপত্রঃ জেনে নিন গরমে শিশুর ডায়রিয়া হলে কী খাবার খাওয়াবেন
ভূমিকাঃ জেনে নিন গরমে শিশুর ডায়রিয়া হলে কী খাবার খাওয়াবেন
পরিপাকতন্ত্রের ব্যাধি হলো ডায়রিয়া যেখানে একজন ব্যক্তির ঘন ঘন মলত্যাগ, এবং
জলমুক্ত মল। ডায়রিয়া সাধারণত বর্ষাকালে হয়ে থাকে, তবে অন্যান্য রীতিতেও হতে
পারে। পচা খাবার, দূষিত খাবার পানীয় জলের মাধ্যমে প্যাথোজেনিক ব্যাকটেরিয়া
যেমন-ই-কোলাই দেহে প্রবেশ করার ফলে ডায়রিয়া হতে পারে। তবে নিশ্চিতভাবে জেনে
রাখা ভালো গরমে শিশুর ডায়রিয়া হলে কি খাবার খাওয়াবেন। নিচে আমরা বিষয়গুলো
নিয়ে আলোচনা করব।
ডায়রিয়া হলে কি ওষুধ খাওয়া উচিত
ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা হলে আমরা অনেকেই চিন্তায় পড়ে যাই। অনেকে আবার
ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া পাতলা পায়খানা ঠেকাতে ফার্মেসি থেকে ঔষধ নিয়ে খেয়ে
থাকি। এটা মোটেই ঠিক না। চিকিৎসকেরা মনে করেন ডায়রিয়া হলে শরীর থেকে যে পানি ও
লবণ বেরিয়ে যায়, সেটা স্যালাইন খেয়ে পূরণ করলেই চলবে। ডায়রিয়া সাধারণত নিজে
থেকেই ভালো হয়ে যায় । অনেক সময় ঔষধ খাওয়ার প্রয়োজন হয় না। আবার ঔষধ না
খেলেও হয় না।
ডায়রিয়া হলে কি ওষুধ খাওয়া উচিত তা আমাদের জানা দরকার। বাজারের ডায়রিয়া
বন্ধের জন্য কয়েক প্রকারের ওষুধ প্রচলিত রয়েছে। যেমন-কডিন জাতীয় ঔষধ হলো
লোপেরামাইট। অনেকে আবার ডায়রিয়া বন্ধ হওয়ার জন্য সিপ্রোফ্লক্সাসিন এবং
এজিথ্রোমাইসিন ধরনের এন্টিবায়োটিক সেবন করে থাকেন। পাশাপাশি ফ্লাজিল
মেট্রোনিডাজল ওষুধ খেতে হয়।
শিশুর ডায়রিয়া হলে কি ওষুধ
শিশুর ডায়রিয়া হলে কি ওষুধ খাওয়াবেন সে বিষয় নিয়ে আমরা এখন আলোচনা
করব।শিশুদের ডায়রিয়া হলে বারবার খাবার স্যালাইন খাওয়াতে হবে। শিশুর বয়স যদি
দুই বছরের নিচে হয়ে থাকে তাহলে তাদের প্রতিবার পাতলা পায়খানার পর দশ থেকে বিশ
চামচ খাবার স্যালাইন খাওয়াতে হবে।
দুই বছর বয়সী শিশুদের পাতলা পায়খানা হওয়ার পর ২০ থেকে ৪০ চামচ খাবার স্যালাইন
খাওয়াতে হবে। যদি বমি হয় বমি হওয়ার ১০ মিনিট অপেক্ষা করার পর স্যালাইন
খাওয়াতে হবে। আপনাদেরকে ভালোভাবে মনে রাখতে হবে ,ঔষধের পাশাপাশি গরমে শিশুর
ডায়রিয়া হলে কি খাবার খাওয়াবেন।
ডায়রিয়া হলে কি কি খাওয়া যাবে
ডায়রিয়া হওয়ার কারণে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণ পানি বের হয়ে যায়, তাই সে
ঘাটতি পূরণে প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হয়। প্রথমে আমাদেরকে জানতে হবে ডায়রিয়া
হলে কি কি খাবার খাওয়া যাবে সে সম্পর্কে । খাবারগুলো হলো যেমন-ডাবের পানি, জুস,
স্যালাইন , ইত্যাদি সহ যেকোনো তরল খাবার বেশি বেশি খেতে হবে।
তরল খাবার খেয়ে যদি কারো শক্তি বৃদ্ধি না হয় তরল খাবারের পাশাপাশি তাকে শক্ত
খাবার দিতে হবে, যেমন খিচুড়ি। আবার সাথে এই খাবারগুলোও খাবেন দই, কলা, ফলের রস
এবং আলু।
ডায়রিয়া হলে কি কি খাওয়া যাবে না
ডায়রিয়া হলে কি কি খাবার খাওয়া যাবেনা এ বিষয় নিয়ে আমরা নিচে আলোচনা করেছি-
- ডায়রিয়া হলে দুধ বা দুগ্ধ জাতীয় খাবার খাবেন না। কারণ দুধ হজমের সমস্যা করে এবং দুধ পেটে গ্যাস তৈরি করতে পারে। তাই ডায়রিয়া হলে পনির, দুধ মাখন জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত না।
- ডায়রিয়ার সময় ঝাল বা তৈলাক্ত খাবার খাওয়া একেবারেই উচিত না। ডুবো তেলে ভাজা ঝাল বা মসলাদার যুক্ত খাবার থেকে দূরে থাকুন। কারণ বেশি ঝাল বা ফ্রাই করা খাবার খেলে পেটে গ্যাস সৃষ্টি করে সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- ডায়রিয়ার সময় ভুল করে মদ্যপান করা যাবে না। মদ্যপানের কারণে হজমের সমস্যা হতে পারে। এ কারণে ডায়রিয়ার সময় মদ্যপান থেকে বিরত থাকুন ।
- চা বা কফি, আসলে ক্যাফেন জাতীয় পানীয় খাবার ডায়রিয়া হলে খাওয়া উচিত হবে না। কারণ চা বা কফি পেটের জ্বালা বারিয়ে দিতে পারে। তবে আদা চা খেতে পারেন।
ডায়রিয়া থেকে মুক্তির উপায়
ডায়রিয়ায় সাধারণত কয়েক দিনের মধ্যে চিকিৎসা ছাড়াই ভালো হওয়ার সম্ভাবনা থাকে
বা ভালো হয়ে যায়। ডায়রিয়ার সময় পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রামে থাকুন এবং
বিশ্রামের পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে পানীয় ও তরল খাবার খান। অন্যান্য খাবার থেকে
সতর্ক থাকুন। শরীরের শক্তি বৃদ্ধির জন্য বা পরিপূর্ণ পানি শরীরে রাখার জন্য
প্রচুর পরিষ্কার পানি ও ফলের রস খেতে হবে।
বিশেষ করে পানি ফুটানোর সময় পানিতে বলক উঠার পরেও কয়েক মিনিট চুলায় রেখে দিন।
এরপর পানি ঠান্ডা করে তারপরে পান করুন। পানি ফুটানোর ব্যবস্থা যদি না থাকে তাহলে
পানিতে বিশুদ্ধকরণ ক্লোরিন ট্যাবলেট ব্যবহার করুন ।রাস্তার আশেপাশের অস্বাস্থ্যকর
উন্মুক্ত খাবার কখনোই খাবেন না।
বাইরে থেকে যখন বাসায় যাবেন বা খাবার আগে ২০ সেকেন্ড ধরে আপনার হাত পরিষ্কার করে
নিন। বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে ফিডারে কখনো কিছু খাওয়াবেন না। যদি খাওয়াতে
হয় ফিডারটি পানি ও সাবান দিয়ে পরিষ্কার করে নিন এবং গরম পানিতে ফুটিয়ে নিন।
ভালোভাবে খেয়াল রাখতে হবে ফিডারের নিপিলের জন্য কোন রকম ময়লা না থাকে
শেষ কথা
পরিশেষে আমরা বলতে পারি গরমের শিশুর ডায়রিয়া হলে কি খাবার খাওয়াবেন এই
সম্পর্কে উপরের আলোচনা থেকে আমরা অনেক কিছু জানতে পারলাম। ডায়রিয়া হওয়ার ফলে
শরীর থেকে পানির পরিমাণটা কমে যায়। এজন্য এ সময় প্রচুর পরিমাণে পানি ও তরল
খাবার খেতে হবে। ডাবের পানি, জুস, ওর স্যালাইন এই খাবার গুলো বেশি বেশি খেতে হবে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url