টমেটো বেশি খেলে যেসব মারাত্মক রোগ হতে পারে জেনে নিন

এই আর্টিকেলে আমরা টমেটো বেশি খেলে যেসব মারাত্মক রোগ হতে পারে সেগুলো সম্পর্কে আলোচনা করব। টমেটো হল সোলানাম লাইকোপারসিকাম উদ্ভিদের ভোজ্য রসাল ফল, এটি সাধারণত টমেটো গাছ নামে পরিচিত। এতে রয়েছে ভিটামিন এ, ফলিক এসিড, লাইকপেন, ভিটামিন কে, ক্রোমিয়াম ও গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিনসমূহ।

টমেটো বেশি খেলে যেসব মারাত্মক রোগ হতে পারে জানুন
ত্বক সুস্থ্য রাখা, ত্বকের উজ্জ্বলতা প্রদানের পাশাপাশি টমেটো হার্ট ভালো রাখে, ক্যান্সার প্রতিরোধ করে, ব্রণ দূর করে, হজমে সাহায্য করে, কিডনি সুস্থ রাখে, রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখে। এগুলোর পাশাপাশি টমেটো বেশি খেলে যেসব মারাত্মক রোগ হতে পারে সে বিষয়গুলো নিয়ে নিচে আলোচনা করব।

পোস্ট সূচীপত্রঃটমেটো বেশি খেলে যেসব মারাত্মক রোগ হতে পারে জেনে নিন

ভূমিকাঃটমেটো বেশি খেলে যেসব মারাত্মক রোগ হতে পারে জেনে নিন

নাশপাতি, কলা, আঙ্গুর, আপেল ইত্যাদি ফলের চেয়ে টমেটো কম দামি হলেও এর স্বাস্থ্য উপকারিতা চার গুণ বেশি অন্যান্য ফলের চেয়ে। টমেটোতে রয়েছে লাইকোপেন, ভিটামিন এ, ফলিক এসিড, ভিটামিন কে, ক্রোমিয়াম ও গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন সমূহ। ত্বককে সুস্থ রেখে, ত্বকের উজ্জ্বলতা প্রদানের পাশাপাশি টমেটো ক্যান্সার প্রতিরোধ করে, ব্রণ দূর করে, হজমে সাহায্য করে, হার্ট ভালো রাখে, এবং রক্তচাপ, স্বাভাবিক রাখে, এবং কিডনি সুস্থ রাখে। এন্টিঅক্সিডেন্ট এর পরিমাণ টমেটোতে বেশি থাকায় রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

টমেটো খাওয়ার নিয়ম

আমরা সবাই টমেটো পছন্দ করে থাকি টমেটো পছন্দ করে না এরকম মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। টমেটো সাধারণত কেউ ফল হিসেবে খাই আবার অনেকেই টমেটো খায় সবজি হিসেবে। টমেটো ফল এবং সবজি দুইভাবে উপভোগ করা যায়। শীত মৌসুমে ব্যাপক হারে টমেটো উঠে থাকে বাজারে। প্রচুর পরিমাণে টমেটো বাজারে ওঠার কারণে এর কদর অনেকটাই কমে যায়। তবে বছরের অন্য সময় যে টমেটো পাওয়া যায় তখন দাম থাকে অনেক চওড়া। 
বিশেষ করে টমেটো বিভিন্ন সবজির সঙ্গে সবজি হিসেবে খাওয়া হয়। তাছাড়া সালাত হিসেবে খাওয়ারও প্রচলন রয়েছে। আবার টমেটো থেকে সস তৈরি করা হয় যা অনেকরই প্রিয়। এখন প্যাকেট টমেটো সস সারা বছরেই পাওয়া যায়। রেস্তোরাই নকল সোসের অভাব নাই। তবে কিছু মানুষ আছে টমেটোকে আপেলের মতো করে খেয়ে থাকেন। তারা টমেটোকে ফল হিসেবে গ্রহণ করেছেন। কিন্তু টমেটো খাওয়ার সঠিক একটি পদ্ধতি রয়েছে আসুন জেনে নেয়া যাক পদ্ধতিটা কি। 

এক্ষেত্রে বাজার থেকে কিনা টমেটো হলে হবে না কারণ বাজারে যে টমেটো পাওয়া যায় তাতে রাসায়নিক দেওয়া থাকে, রাসায়নিক থাকবে না একথা বলা যাবে না। এজন্য বাজার থেকে কিনা টমেটো হলে হবে না নিজ হাতে একটি টমেটো নিজে লাগানো গাছ থেকে উঠান এবং ভালোভাবে পানি দিয়ে ধুয়ে নিন । তারপর হাতে লবণ নিন যে সে লবণ হলে হবে না, সামুদ্রিক লবণ লাগবে। সামুদ্রিক লবণ ভালোভাবে টমেটোতে লাগানোর পর তাতে একটি কামড় দিন তারপর স্বাদটা উপভোগ করুন।

টমেটোর উপকারিতা

টমেটো একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর সবজি। শীতকালীন সবজি হলেও টমেটো এখন সারা বছরই পাওয়া যায়। শীতকালীন সবজি হওয়ায় শীতের সময়ে এর যে স্বাদ অন্য সময়ে স্বাদ আলাদা। টমেটো রান্না করেও খাওয়া যায় সালাত হিসেবেতো জনপ্রিয়তা রয়েছে। এছাড়া টমেটো থেকে আমরা পেয়ে থাকি পটাশিয়াম, ক্রোমিয়াম, কোলিন, কপার, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, ফোলেট এবং ফসফরাসের মত খনিজও থাকে। টমেটোতে চর্ম রোগের জন্য অত্যন্ত কার্যকর উপাদান রয়েছে। 

যাদের চর্মরোগ রয়েছে বা ত্বকের কোন সমস্যা রয়েছে তারা টমেটো প্রক্রিয়াজাত করে ব্যবহার করতে পারেন। মুখের সৌন্দর্য রক্ষার জন্য টমেটো ব্যবহার অপরিহার্য। মুখের সৌন্দর্য ধরে রাখতে সাহায্য করে টমেটো, বয়সের ছাপ দূর করে, মুখের ত্বক মসৃণ ও কোমল করে তুলে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য টমেটো খাওয়া ভালো এজন্য সকালে খালি পেটে একটি বা দুটি করে টমেটো খাওয়া উচিত। যারা রক্তস্বল্পতায় ভুগছেন তাদের জন্য টমেটো খুব উপকারী। 

জ্বরের ক্ষেত্রে টমেটো খুব কার্যকারী গায়ের তাপমাত্রা বৃদ্ধি হলে টমেটো খেলে তাপমাত্রা কমতে পারে এবং সর্দি -কাশি প্রতিরোধে টমেটো বেশ কার্যকারী। টমেটো ক্রোমিয়াম নামক এক ধরনের খনিজ থাকায় এটি রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণের সহায়তা করে। সেই সাথে রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।

টমেটোর অপকারিতা

টমেটো খাওয়ার যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি তার পাশাপাশি টমেটোর খাওয়ার অপকারিতা রয়েছে। এজন্য টমেটো খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে সচেতন হওয়া জরুরী। কারন কোন জিনিসই বেশি খাওয়া ভালো না। এটি অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়ার ফলে ক্ষতি হতে পারে। তাই আমরা নিচে টমেটোর অপকারিতা গুলো বলছি তা নিম্নরূপ:যদিও টমেটোতে এলার্জি রয়েছে , তাদের পরাগ এক একটি শ্বাস-প্রশ্বাসের এলার্জির কারণ হতে পারে। 

কেউ যদি হার্টের সমস্যার জন্য ঔষধ খেয়ে থাকেন তার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী টমেটো খাওয়া উচিত। যেহেতু টমেটোতে পটাশিয়াম পাওয়া যায়, এজন্য রক্তে পটাশিয়ামের মাত্রা বাড়াতে পারে ফলে কার্ডিওভাসকুলার ঝুঁকি বাড়তে পারে। শুধু তাই নয় কারো যদি কিডনির সমস্যা থেকে থাকে তাকেও ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী টমেটো খেতে হবে। 
টমেটোতে রয়েছে ম্যালিক ও সাইট্রিক এসিড যা পাকস্থলীতে অতিরিক্ত এসিড বা অম্লের প্রবাহ সৃষ্টি করে এ কারণে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে। যাদের পেটের পিরাজনিত সমস্যা রয়েছে তাদের টমেটো থেকে দূরে থাকাই ভালো। অতিরিক্ত টমেটো খাওয়ার ফলে কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

কারণ টমেটোতে রয়েছে অক্সালেট ও ক্যালসিয়াম যা শরীর থেকে সহজে বের হয় না। এগুলো জমা হওয়া শুরু করলে কিডনিতে পাথর জমে। অতিরিক্ত টমেটো খাওয়ার ফলে গেটে বাত দেখা দিতে পারে। সালমোনেলা নামের এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া আছে টমেটোতে যা ডায়রিয়ার জন্য দায়ী।

টমেটো বৈশিষ্ট্য

বিভিন্ন জাতের টমেটো রেস্তোরাঁগুলিতে এবং দুর্দান্ত খাবারের সাথে এমন জায়গা গুলোতে ব্যবহার করতে সক্ষম হতে খুব ভালো অর্গানলপটিক বৈশিষ্ট্য অর্জন করতে চাই। এই বৈশিষ্ট্য গুলি অবশ্যই ভোক্তার জন্য আকর্ষণীয় হতে হবে । রং, গন্ধ এবং উভয়েরই অবশ্য একটি দুর্দান্ত অবদান রাখতে হবে যাতে তারা এই প্রজাতির ভালো দাম দিয়ে থাকে। 

এজন্য বলা চলে সর্বোত্তম টমোটার জাতটির আকর্ষণীয়তা হল এর রং তীব্র লাল এবং গোলাকার সবুজ ঘাড় রয়েছে। এই ধরনের টমেটো প্রজাতিগুলিকে প্রজাতির মধ্যে একটি ধ্রুপদী অবলম্বন করে তোলে।

কাঁচা টমেটোর উপকারিতা

এখন বাজারে প্রচুর কাঁচা টমেটো পাওয়া যায়। এটি সালাদ বা সবজি হিসেবে বেশি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। একজন মানুষ যদি প্রতিদিন দুই থেকে তিনটি টমেটো খায় তাহলে সে অনেক উপকার পেয়ে থাকবে। টমেটো খাওয়ার ফলে ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়। কাঁচা টমেটোতে আছে লাইকোপেন নামে একটি উপাদান। যা ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা পালন করে থাকে। 

আবার অন্যভাবে কাঁচা টমেটো ব্যবহার করা যায় ১০ থেকে ১২টা টমেটো নিয়ে তার ভেতরটা পরিষ্কার করে নিন। তারপর টমেটোটা ভালোভাবে খুলে মুখে কিছুক্ষণ লাগিয়ে রাখুন। তারপর ১০ মিনিট হয়ে গেলে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এভাবে সপ্তাহে কয়েকবার এমনভাবে ত্বকের পরিচর্যা করলে ত্বকের বলিরেখা কমতে শুরু করবে। সেই সঙ্গে ত্বককে দেখতে উজ্জ্বল দেখাবে।

শেষ কথা

পরিশেষে আমরা বলতে পারি। টমেটো বেশি খেলে যেসব মারাত্মক রোগ হতে পারে এই বিষয়ে এই আর্টিকেলের ভিতরে আমরা বিশদভাবে আলোচনা করেছি। টমেটোর গুণের কথা সবারই জানা। টমেটো একটি সুস্বাদু ও পুষ্টি সমৃদ্ধ শীতের সবজি। তবে বিশেষ করে আমাদের দেশে সারা বছরই টমেটো পাওয়া যায়। সালাত বা রান্নার ক্ষেত্রে টমেটো ছাড়া ভাবাই যায় না।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url